একটা লোকের জন্ম হলো ২৯ ফেব্রুয়ারী। লোকটি তার ২০তম জন্মবার্ষিকীতে বুড়ো হয়ে মরে গেল। মৃতু্যকালে তার বয়স কত হয়েছিল?
অঙ্ক নামের মধ্যেই একটা আতঙ্ক রয়েছে, বিশেষ করে আমার মতো অলস ছাত্রদের কাছে অঙ্ক যে কতবড় আতঙ্কের নাম তা গুছিয়ে লেখা যাবে না।
তবু ইতোমধ্যেই হয়তো অনেকেই এ অঙ্কটার সমাধান করে ফেলেছেন, তাই আমি আর সমাধান বলে সময় নষ্ট করবো না।
আমার কাছে ২৯ ফেব্রুয়ারী জন্মগ্রহণকারী লোকটি কতবছর বয়সে মৃতু্য বরণ করলো তা মূখ্য নয়, বেচারা এক জীবনে কতকি লস করলো তা-ই মূখ্য।
বন্ধুবান্ধবদের জন্মবার্ষিকীতে নিশ্চয়ই তাকে সামর্থ অনুযায়ী উপহার নিয়ে উপস্থিত হতে হয়েছে, কিন্তু জীবন ভর তার জন্মদিনে ইনভেস্টমেন্টের সিকিভাগ তুলেই সন্তষ্ট থাকতে হলো এ ভেবেই আমি পেরেশান। আহা বেচারা।
আসেন এবার একটা জটিল অঙ্ক করি।
একটা ছেলের জন্ম হলো জৈষ্ঠ মাসের ৩২ তারিখে। ছেলেটা একটু বড়ো হয়ে অবাক হয়ে দেখলো বাঙ্লা সনে ৩২ তারিখ বলে কিছুই নেই। তো এই ছেলেটা ১০০ বছর বাঁচলে কতটা জন্মদিন পালন করতে পারবে?
১৯৬৭ সালে ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর নেতৃত্বে বাঙলা একাডেমীর একটি কমিটি বাঙলা সনের সংস্কার করে। বৈশাখ থেকে ভাদ্র এই পাঁচ মাস ৩১ দিন ও অন্য মাস গুলো ৩০ দিন করে নতুন ভাবে বাঙলা সনতারিখ ঢেলে সাজানো হয়। আর লীপ ইয়ারে ফাল্গুন মাসকে ৩১ হিসাব করার বিধান করা হয়।
এই বিধান কবে কার্যকর হয়েছে তা জানি না, তবে আশির দশকেও পুরণো নিয়মে বাঙলা ক্যালেন্ডার দেখা গেছে। ফলে পুরনো নিয়মে জন্মগ্রহণ করে নতুন নিয়মের মারপ্যাচে ছেলেটি তার জন্মদিন উদযাপন থেকে বঞ্চিত হলো। এই ছেলেটার জীবন থেকে জন্ম তারিখটা কেড়ে নিয়েছে বাঙলা একাডেমী।
আসেন সবাই বাঙ্লা একাডেমী কতর্ৃক নির্যাতিত এ সকল অভাগাদের জন্য সমবেতভাবে কান্নাকাটি করি।