রাজধানীর পুরান ঢাকার নিমতলী এলাকায় রাত সোয়া ন টায় ৪টি বাড়ী ও ১২ টি দোকানে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে নারী ও শিশুসহ অন্তত ১৫০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, আহত শতাধিক (সূত্র ইটিভি)। নিহতদের মাঝে কায়েদটুলীর একই পরিবারের ১৩ জন রয়েছে বলে জানা গেছে। বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণে এ অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। একটি ভবনের নীচতলার কেমিক্যালের গুদামে ও নীচের ভাঙ্গারির দোকানের বই-পত্রে আগুন লাগলে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার ব্রিগেডের ২০টি ইউনিট রাত সাড়ে ১০ টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এনে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। তবে মাত্র দু’মিনিটের দূরত্বের ফায়ার স্টেশন থেকে ফায়ারসার্ভিসের গাড়ী আসতে এক ঘন্টা সময় লাগায় অনেকেই ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। (সূত্র: এটিএন নিউজ)
রাজধানীর তেজগাওয়ের বেগুনবাড়িতে চারতলা বাড়ী উপড়ে পড়ে ২৫ জন নিহত হলে সকালে “বাতাসে লাশের গন্ধ” শিরোনামে ব্লগ লিখেছিলাম। কিন্তু কে জানতো, সূর্যের আলো নিভে যেতেই আবার শুনতে হবে অগ্নিদগ্ধ শিশুর চিৎকার। আকাশ বাতাস ভারী হয়ে আছে আগুনে পুড়ে পুড়ে অঙ্গার হওয়া ভালোবাসায় জড়ানো শিশুর তুলতুলে শরীরে, ভারী হয়ে আছে স্নেহময়ী মায়ের আর বিপদে আপদে ছায়াদানকারী পিতানামের বটবৃক্ষ পোড়া গন্ধে।
মৃতের সংখ্যা ১৫০ ছাড়িয়ে গেছে
মৃত্যুর মিছিল বেড়েই চলেছে, লাশের লাশে বেড়ে উঠছে শোকের পাহাড়। আগুন লাগলেই ডজন ডজন পুড়ে ছাই হবে, শত শত মানুষের স্বজন হারানো বিলাপে দেশটা কেঁপে কেঁপে উঠবে এটা যেন খুবই স্বাভাবিক বিষয়। আগুনের লেলিহান শিখা থেকে রেহাই মেলে না ধনী গরীর কারো। প্রতিবছরই খোদ রাজধানীতেই বিভিন্ন বস্তি আগুনে ভষ্মীভূত হয়, কখনো বা নিছক দূর্ঘটনায়, আবার কখনো বা বস্তি উচ্ছেদের হাতিয়ার হিসেবে পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগানোর কথাও শোনা যায়। বিভিন্ন তৈরী পোষাক শিল্প কারখানায় আগুনে পুড়ে প্রতি বছরই নিহত হয় অনেকেই, প্রাণ বাঁচাতে যখন ওরা দিগ্বিদিগ ছুটে চলে বাঁচার আশায়, গেটের বন্ধগরাদ কেড়ে নেয় শ্রমিকের সবটুকু বিশুদ্ধ বাতাস, পদদলিত হয়ে পুঁতিগন্ধময় পৃথিবী থেকে মুক্তি পায় অনেকেই। আগুনে পুড়ে পুড়ে যেমন নি:স্ব হয় বস্তিবাসী, তেমনি উচ্চবিত্তের আভিজ্যাত্যও নিস্তার পায় না। তাইতো গত বছর মার্চে বসুন্ধরা শপিং মলের অগ্নিকান্ডে নিহত হয়েছিল ১৭ জন।
দু:স্বপ্নের বুঝি শেষ হতে নেই। লাশের পরে লাশের কুচকাওয়াজে কেঁপে কেঁপে ওঠে বাংলাদেশ, শুধু কাঁপেনা সরকাররগুলোর হৃদয়। অপরিকল্পিত নগরায়ন, অপরিকল্পিত রাস্তাঘাট, শিল্পকারখানায় ছেয়ে আছে রাজধানী। সামান্য অগ্নিকান্ড, যা হয়তো দমকল বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থেমে যেতে পারে, তা কেড়ে নেয় ডজন ডজন মানুষের প্রাণ। অপরিকল্পিত রাস্তাঘাটের দাপটে আগুনের নাগাল মেলেনা দমকলবাহিনীর। অথচ দিনের পর দিন এভাবেই ঝড়ে যায় তরতাজা প্রাণ, তবু টনক নড়ে না কারো। ঢাকার আকাশ ছাপিয়ে ইতোমধ্যেই বিশ্ববাসীর নাকে পৌঁছে গেছে লাশের গন্ধ, শুধু ক্ষমতার নেকাবে ঢাকা সরকার ও তাদের আমলাদের স্নায়ুতে এতটুকু আচড় কাটে না তা। যারা ভালোবাসা বোঝে না, হাসি কান্না বিরহ বোঝে না, যারা মানুষ বোঝে না, মানুষের ঘাড়ে সিন্দাবাদের ভুতের মতো জেঁকে বসার কোন অধিকার তাদের থাকতে পারে না।
(বি.দ্র. সরকার বলতে শুধু আওয়ামী লীগ নয়, বরং অতীতের সকল সরকারকেও বুঝানো হয়েছে)
আরো সংবাদ:
Toll rises in Bangladesh fire -Al Jazeera
109 die in fire in Bangladesh -CNN
Bangladeshi housing-block fire kills dozens -BBC
Bangladesh: Fire Kills Over 100 at Dhaka Apartments -The New York Times
বিরিয়ানির আঁচে আগুন, মৃত ১১৭ -আনন্দবাজার পত্রিকা
তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণার দাবী জানাচ্ছি।
[উত্তর দিন]
গভীর সমবেদনা জানাই নিহত স্বজনদের প্রতি। আমার ও সমব্যাথীত।
[উত্তর দিন]
শাহরিয়ার উত্তর দিয়েছেন:
জুন 4th, 2010 at 3:32 পূর্বাহ্ন
ধন্যবাদ।
[উত্তর দিন]
গভীর সমবেদনা জানাই নিহত স্বজনদের প্রতি। আমার ও সমব্যাথীত।
[উত্তর দিন]
শাহরিয়ার উত্তর দিয়েছেন:
জুন 4th, 2010 at 3:33 পূর্বাহ্ন
আপনাকেও ধন্যবাদ।
[উত্তর দিন]
mink
[উত্তর দিন]
দুঃখজনক মর্মান্তিক দূর্ভাগ্যজনক ।বেগুনবাড়িরটা শেষ হতে না হতেই এখন পুরানো ঢাকা।
[উত্তর দিন]
একটি শোক সংবাদ শেষ না হতেই আরেকটা শুরু। আগেরটার চেয়ে পরেরটা আরো মর্মান্তিক।
[উত্তর দিন]
khubi dukkho jonok
[উত্তর দিন]