কয়েকদিন আগে বিরোধী দলীয় নেত্রীর দেশব্যাপী হরতাল আহ্বানে ক্ষুদ্ধ হয়ে “দেশনেত্রী! আরেকবার ভাবুন” শিরোনামে ব্লগ লিখেছিলাম। আমার পরিচিত অনেক বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে এজন্য বেশ বাঁকা কথাও শুনতে হয়েছে। তবুও আমি অনঢ় ছিলাম, কিছুতেই আমি হরতালকে সমর্থন করার কারণ খুঁজে পাই না। একদিনের হরতালে দেশে ক্ষতি হয় ৫০০ কোটি টাকা, অবরোধে আরো বেশী। হরতালকে এতটাই ঘৃণ্য মনে হয় যে হরতাল প্রতিরোধে গণভোটের আব্দার করে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ব্লগে গলা ফাটিয়েছি। কিন্তু আজ বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে যখন হরতালের বিকল্প খুঁজে চলেছি, তখন চারিদিকে শুধুই দূর্ভেদ্য পাষাণ প্রাচীরের মাথা ঠুকে যায়।
আজ কাকডাকা ভোরে বন্ধু ফোনে টিপ্পনী কাটে, “কি হে গান্ধী, এবার কি বলবে? হরতাল ভালো নাকি বাকশাল?” আমি মৃত্যুকূপে বাকশালী দৈত্য বধে অন্ধকারে আলাদিনের প্রদীপ হাতরে মরি, তবু স্যাঁতসেতে পাথুরে দেয়াল ছাড়া কিছুরই নাগাল মেলে না। বাকশালী বন্দীশালায় হরতাল-অবরোধ নামের ঘৃণ্য নদর্মা ছাড়া পালানোর বিকল্প পথ খুঁজে পাই না।
বিপল্প খুঁজে চলেছি, হরতালের চেয়ে কার্যকরী ভালো কোন বিকল্প কর্মসূচী। সমাবেশ হতে পারতো ভালো বিকল্প, হতে পারতো কার্যকরী প্রতিবাদের ভাষা। তবু হয়নি,হতে পারে নি সরকারের দমন নীপিড়নের ভয়ে। একের পর এক সভাসমাবেশ পন্ড করে দেয়া হলো ১৪৪ ধারা জারি করে। বিএনপি আয়োজিত পল্টনের জনসমাবেশে যোগদানকারী বিভিন্ন গাড়ীতে আক্রমন ও ভাংচুর করে সরকারী দলের নেতা কর্মীরা, আহত করে অনেককে। এর আগে বরিশালে সমাবেশে যেতে বাধা দেয়া হয়েছে, বাধা দেয়া হয়েছে রাজশাহীর সমাবেশে। রাজশাহীর সমাবেশে যোগদান কারী জনতাকে আক্রমন করে আহত করা হয় শতাধিক লোককে, যাদের মাঝে নির্মম ভাবে নিহত হন একজন। একই ভাবে পথে পথে বাধা দেয়া হয় চট্টগ্রামের মহাসমাবেশে।
এভাবে একের পর এক নির্যাতন আর হত্যার রাজনীতিতে গনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে রাজনৈতিক কর্মসূচী পালন অসম্ভব হয়ে পরে। গণমানুষের দাবী নিয়ে, সরকারের বিভিন্ন অনৈতিক ও স্বেচ্ছাচারী কার্যকলাপের প্রতিবাদের অধিকতর ভালো কর্মসূচীর পথ রুদ্ধ করে দেয় সরকার। তবু সরকারকে যা ইচ্ছে তা-ই করতে দেয়া যায় না। আর তাই সরকারের যাবতীয় কাযর্ক্রমের বিশ্লেষণের জন্য, সাধারণ মানুষের চাওয়া পাওয়াকে তুলে ধরার জন্য, সরকারী দুর্ণীতি, স্বজনপ্রীতি, দলীয়করণ ইত্যাদি প্রতিরোধে গণমাধ্যমই আশ্রয়স্থল। এ ক্ষেত্রে বেশ কিছু পত্র-পত্রিকা ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া সরকারের যাবতীয় অনিয়ম এতটাই সুক্ষভাবে তুলে ধরতে থাকে যে সরকারের পক্ষে নিরপদ্রুপভাবে অন্যায় চালিয়ে যাওয়া কিছুটা বাধাগ্রস্থ হয়ে পড়ে। তাই সরকারের গঠনমূলক সমালোচনার সর্বশেষ মাধ্যমটিরও টুটি চেপে ধরার কাজ শুরু হয়, যেমনটি হয়েছিল ১৯৭৫ সালে। এর উদ্দেশ্য একটাই, সরকার চায় বাধাহীন দূর্ণীতি, হত্যা, সন্ত্রাস, গণধর্ষণের বাকশালী রাজনীতি।
সমালোচনা তাদেরই কাম্য যারা নিজেদের দোষগুলো দেখতে চায়, ভুলত্রুটিগুলো শুধরে নিতে চায়, সঠিক পথে চলতে চায়। আওয়ামী লীগ যেন পণ করেছে, কিছুতেই কারো বারণ শুনবে না, কোন প্রতিরোধ মানবে না, বরং তারা যে ভুল পথে চলছে সে পথে ধাবিত হয় আরো তীব্রগতিতে, ধেয়ে চলে ১৬ কোটি মানুষের বাংলাদেশ নিয়ে অন্ধকারের পানে, ছুটে চলে অনিবার্য সংঘাতের দিকে। যে সরকারের অধীনে সংবাদ পত্রের স্বাধীনতা থাকে না, সরকারের তোষামোদী না করলে, সরকারের অন্যায় আচরণের প্রতিবাদ করলে পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল করা হয়, যে সরকারের খেয়ালখুশীমতো সংবাদ পরিবেশন না করলে স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল নিষিদ্ধ হয়ে যায়; হত্যা, সন্ত্রাস, গণধর্ষণ, বিদ্যুত, গ্যাস, পানি সমস্যা, দেশের স্বার্থবিরোধী বিদেশী চক্রান্ত টিপাইমুখ বাধ ইত্যাদি জনগুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে যে সরকারের অধীনে শান্তিপূর্ণ মিছিল মিটিং সমাবেশের অনুমোদন মেলে না, মেলে না মতপ্রকাশের অধিকার, তবে সেই সরকারের মৃত্যুকূপ থেকে দেশ ও দেশের মানুষকে রক্ষা করতে যদি ঘৃণ্য হরতাল-অবরোধ কর্মসূচী দিতে বাধ্য করা হয় তবে সে দায় কিছুতেই সরকার এড়াতে পারে না।
নিরংকুশ সংখ্যাগরিষ্টতা নিয়ে ক্ষমতায় পাকাপোক্তভাবে বসে আছে আওয়ামী লীগ। তার আগে নিরংকুশ সংখ্যাগরিষ্টতা নিয়ে ক্ষমতায় ছিল চারদলীয় জোট, তারো আগে স্বৈরাচার এরশাদ, ছিল স্বাধীনতা পরবর্তী আওয়ামী সরকার। নিরংকুশ সংখ্যাগরিষ্টতা যে চীরস্থায়ী বন্দোবস্তো নয় তা কারো অবোধগম্য হওয়ার কথা নয়। কিংবা ভুলে যাওয়াও উচিত নয় নিরংকুশ সংখ্যাগরিষ্ট সরকারগুলোর বিদায়ের ইতিহাস, ভুলে যাওয়া উচিত নয় বাকশালের করুণ পরিণতির কথা। নিরংকুশ সংখ্যাগরিষ্টতার দম্ভে আওয়ামী সরকার যা খুশী তাই করে বেড়াবে, যাকে খুশী তাকে দিয়ে কারাগার ভরে তুলবে, একটা লাশের বদলে দশটা লাশ ফেলে দেবে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে চাপাতি লীগের দূর্গন্ধ ছড়িয়ে শুয়োরের খামারে পরিণত করবে, প্রকাশ্য রাস্তায় প্রভাত ফেরীর নারীদের ওড়না টানবে, গণধর্ষণে কলঙ্কিত করে তুলবে গোটা বাংলাদেশ, আর বাংলার মানুষ মুখ বুজে সবকিছু সয়ে যাবে এমনটি যারা ভাবেন তাদের দিবানিদ্রা ভেঙ্গে এখনই সতর্ক হওয়া উচিত। যে অনিবার্য সংঘাতের দিকে টেনে নেয়া হচ্ছে সাধারণ মুক্তিকামী জনতাকে, যে লড়াইয়ে জয় হবে জনতার, যেমনটা হয়েছে অতীতে বারে বার।
সরকারের উচিত সে অনিবার্য সংঘাতকে ত্বরান্বিত না করে তাকে এড়িয়ে যাওয়া, জনতার দাবীর কাছে নতি স্বীকার করা। যে লড়াইয়ে শুধুই পরাজয়, অপমান আর লাঞ্ছনা, সে সংঘাত এড়িয়ে দেশের স্থিতিশীলতা ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় সরকার মনোযোগী হবে এটাই কামনা করছি।
dhonnobad shariar vai..
[উত্তর দিন]
জালিম বার বার একই ভুল করে।
[উত্তর দিন]
১৯৭০ সালের নির্বাচনে পাকিস্থানীদের পরাজিত করে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সেই অনিবার্য সংঘাতের হাত ধরে অর্জন করেছিলাম স্বাধীনতার সোনালী সূর্য ।
.
বন্ধু ! ভয় পেয়না । এ অনিবার্য সংঘাত স্বাধীনতার শত্রুদের রত্তের স্রোতে দেশ মাতৃকাকে ধুয়ে মুছে সাফ করার সংঘাত । আমাদের স্বাধীনতার দ্বিতীয় জন্ম । ১৯৭১ এ দেশ যেমন পাকিস্থানী হানাদার মুক্ত হয়েছিল ২০০৯ এর নির্বাচনে জনগণ আ.লীগকে ভোট দিয়েছিল নব্য পাকিস্থানী হানাদার রূপী বিএনপি জামাতকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য । তাই এ অনিবার্য সংঘাত দেশের মানুষের জন্য । দেশের জন্য । শান্তি আর নিরাপত্তার জন্য ।
.
ভ্রাতা! প্রসব বেদনা যতই তীব্র হবে নতুন সৃষ্টির সময় যে ততই নিকটতর ।
কিছু কিছু ধংস তো নব সৃষ্টির উম্মাদনা ।
.
তো শাহরিয়ার ! একটু ধৈর্য ! দিন আসতেছে আ.লীগের সাথে সংঘাত করার জন্য কেউ অবশিষ্ট থাকবেনা ।
[উত্তর দিন]
শাহরিয়ার উত্তর দিয়েছেন:
জুন 3rd, 2010 at 3:42 অপরাহ্ন
এরই নাম বাকশাল। দেখাযাক, পেট থেকে উগ্রে দেয়া সেই সুস্বাদু কোরমা-পোলাও (?) বাংলাদেশকে আবারো গেলাতে পারে কি না আওয়ামী লীগ।
[উত্তর দিন]
RADIN উত্তর দিয়েছেন:
জুলাই 27th, 2010 at 4:14 অপরাহ্ন
Please add some document about AL ( specially: story of RAKKHI BAHINI, VIOLENCE AGAINST PEOPLES & STUDENT, KIDNAPPING THE YOUNG GIRLS ETC…) with picure which will help aware the new generation.
[উত্তর দিন]
Need to protect rather protest
Potect BAKSAL and Save nation: Take oath
Shahriar go ahed.
[উত্তর দিন]