স্কুল ড্রেস পরে কলকল ছলছল নদীর মতো ছুটে চলে ছাত্রীদের মিছিল। সাদা পোষাকে মেয়েগুলো যেন একঝাঁক শ্বেতকপত। সকালের সবচেয়ে সুখকর দৃশ্যগুলোর অন্যতম এ দৃশ্যটি। তবু মাঝে মাঝে নদীগুলো গতি হারায় । রাস্তার মোড়ে মোড়ে, অলিতে গলিতে, পান বিড়ির দোকানের পাশে আড়ালে আবডালে ওত পেতে থাকা নেড়ী কুকুরগুলোর ভয়ে পায়রাগুলো তীর তীর করে কাপে। কুকুরগুলোর ভয়ে ছাত্রীদের স্কুল কলেজে যাওয়াই দায়, ছাত্রীদের দেখলেই ওরা ঘেউ ঘেউ শব্দে শীষ কাঁটে, গালবেয়ে বিষাক্ত কষ ঝড়ায়, দু’য়েকটা কুকুর হায়েনার মতো হামলে পরে কিশোরীদের গায়ে।
কুকুরগুলোর হাত থেকে নিস্তার মেলে না প্রাইমারী স্কুলের ছাত্রী থেকে শুরু করে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদেরও, নিস্তার মেলেনা ছাত্রীদের সাথে থাকা অভিভাবক-অভিভাবিকাদের। এদের অনেকেই ভালো ঘরের অবাধ্য সন্তান, অনেকেই রাজনৈতিক বড় ভাইদের আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে বেড়ে ওঠা বেয়াড়া জানোয়ার। অনেকেই ওদের প্রশ্রয় দিয়ে রোমিও নামে ডাকে, ওদের অপকর্মকে বয়সের দোষ বলে চালিয়ে দিতে ইভটিজিং শব্দে হালকা করার চেষ্টা।
নারী শিক্ষার জন্য দিনে দিনে অনুপযুক্ত হয়ে উঠছে বাংলাদেশের শিক্ষার পরিবেশ। নারীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতের পথকে নিরাপদ করতে বরাবরই ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে সরকার। কিছুতেই কুকুরগুলোকে বশে আনতে পারছেন না, বরং দিনে দিনে কুকুরের উৎপাত বেড়েই চলেছে। এ বছর ইতোমধ্যেই কুকুরের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে আত্মহত্যার মতো চরম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে পিংকি , ইলোরা , রেশমা , বৃষ্টি , ফাহিমা সহ অনেকেই। দিনে দিনে পিংকিদের মিছিল ভারী হয়। স্কুলড্রেস পরা ছাত্রীরা যেন মিছিল করে ছুটে চলেছে জীবনের অপরপ্রান্তে, যেখানে নেই কুকুরের আনাগোনা, যেখানে নেই অপমানি, লাঞ্ছিত হওয়ার কোন দূর্ভাবনা।
বাংলাদেশ তৃতীয় বৃহত্তম মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট দেশ হওয়া সত্ত্বেও এখানে ছাত্রীদের জন্য হিজাব পড়া বাধ্যতামূলক নয়। অথচ হিজাব নারীদের নিরাপত্তাকবচ হিসেবেই বিবেচিত। রোমিও নামের কুকুরগুলো সাধারণত হিজাব পড়া মেয়েদের দেখে কম ঘেউ ঘেউ করে। রাষ্ট্র যেহেতু ছাত্রীদের নিরাপত্তা দিতে অপারগ, তাই ছাত্রীরা দিনে দিনে হিজাবের দিকে বেশী ঝুকে পড়ছে। অতীতের তুলনায় বর্তমানে হিজাব পরিহিত মেয়েদের সংখ্যা বেশী। ব্যক্তি উদ্যোগে এ সকল ছাত্রীরা হিজাব ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের কৌমার্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সচেষ্ট।
অথচ সরকার কিছুতেই ছাত্রীদের শালীনতাকে প্রশ্রয় দিতে নারাজ। ইতোমধ্যেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে হিজাব নিষিদ্ধ করা হয়েছে। চুরি ঠেকানোর ফালতু অজুহাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্বিদ্যালয়ে নার্সদের বোরকা ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। আসলে সরকারের পক্ষ থেকে যতই নারীর ক্ষমতায়নের মিষ্টি কথা বলা হোক না কেন তারা নারীকে ভোগ্যপণ্য ছাড়া অন্যকিছুই ভাবতে পারছে না। ইডেন কলেজ সহ বিভিন্ন কলেজে বর্তমান ক্ষমতাশীল আওয়ামী লীগ সরকারের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নিলজ্জ বেশ্যাবৃত্তি, মন্ত্রী, নেতাদের বাসায় ছাত্রীদের দেহব্যবসায় প্রেরণ তারই স্বাক্ষ্য বহন করে।
গতকাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পুলিশ মোতায়েন শুরু করেছে বলে পত্রিকায় সংবাদ পেলাম। কিছুটা স্বস্তি আসতে না আসতেই মনে পড়ে যায় ইয়াছমিনের কথা, মনে পড়ে যায় তানিয়ার কথা, সীমা চৌধুরীর কথা । ওরা সবাই শিকার হয়েছিল অপেক্ষাকৃত বড় কুকুরের হাতে, যে কুকুরগুলোর দায়িত্ব ছিল ওদের নিরাপত্তা দেয়ার। ওরা শিশু বৃদ্ধা কাউকেই কামড়াতে ছাড়ে না। ছ’বছরের তানিয়াকে পুলিশ কন্ট্রোল রুমের বাথরুমে ধর্ষণ করে ওরা প্রমাণ করেছিল আইনের চোখে সবাই সমান, শিশু বৃদ্ধা কোন ভেদাভেদ নেই ওদের কাছে। তাহলে সম্ভ্রমবোধহীন পুলিশ বাহিনীকে স্কুলগুলোর পাশে মোতায়েন করে ছাত্রীদের বিপদের মাত্রা আরেক ধাপ বাড়িয়ে দিল কিনা সরকার তা ভাববার বিষয়। বাথরুমে যাওয়ার অযুহাতে ওরা ছাত্রীদের কমন রুমে ঢুকে পড়ে হামলে পরবেনা তারই বা নিশ্চয়তা কোথায়? স্কুল আঙ্গিনায় পুলিশ নামের সারমেয় না পুষে বরং ওদেরকে বখাটে কুকুরগুলোর পিছনে লেলিয়ে দিলেই হয়, কুকুরে কুকুরে কামড়া কামড়ি করে ওরা মরুক, ছাত্রীরাও নিরাপদ হোক।
ইসলামের সাথে আওয়ামী লীগের বিরোধ আছে তা কমবেশী সবাই জানে। ইসলাম ভীতি কিংবা ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞতার কারনে তারা মাঝে মাঝেই ইসলামপ্রিয় লোকদের একহাত দেখে নেয়ার চেষ্টা চালায়। এরই ধারাবাহিকতায় হিজাব নিষিদ্ধ করার প্রকৃয়া শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের কি একবারও ভেবে দেখা উচিত নয়, যে হিজাব পড়ে নারীরা সম্ভ্রম রক্ষা করছে সে হিজাবকে নিষিদ্ধ করে তারা শুধু ইসলামকেই ঘায়েল করার চেষ্টা চালাচ্ছে না বরং তারা তাদের মা-বোনদেরকেই উলংগ করার পায়তারা করছে। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের গণমানুষের দল। হিজাব নিষিদ্ধ করে যে মা-বোনদের ইজ্জত নিয়ে নোংরামি করছে আওয়ামী লীগ, সে মা-বোনদের এক তৃতীয়াংশ তো তাদের পরিবার থেকেই এসেছে। তাহলে নিছক ইসলামকে কোনঠাসা করার ব্যর্থ চেষ্টা চালাতে গিয়ে নিজেদের মা-বোনদের উলংগ করার পাগলামি কেন করছে আওয়ামী লীগ তা কিছুতেই বোধগম্য নয়।
আমরা আমাদের মা-বোনদের নিরাপদ দেখতে চাই। না, সরকারের পক্ষ থেকে পুলিশ বাহিনী দিয়ে তাদের নিরাপত্তা হেফাজত কাম্য নয়, বরং আমরা আমাদের মতো করে আমাদের মা বোনদের নিরাপদে রাখতে চাই। আমরা চাই তারা হিজাব নিয়ে সম্মানের সাথে সমাজে চলাফেরা করুক। সরকার সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তা দিতে জানে না, ওরা অপরাধী-সন্ত্রাসীদের রক্ষার জন্যই ক্ষমতায় আসে। তাই সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের মা-বোনদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চাই না, সরকার নিজেই আপদ হয়ে আমার মা-বোনদের সামনে যেন না দাড়ায় শুধু এটুকুই চাই।
মাদারীপুরে ছাত্রীনিবাসে পুরুষ কর্মচারীরা!
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-04-06/news/54478
[উত্তর দিন]
৩ বছরের শিশু ধর্ষিkত
http://www.bdnews24.com/bangla/details.php?cid=2&id=124000&hb=1
[উত্তর দিন]
বখাটের উৎপাতে আরেক ছাত্রীর আত্মহত্যা
http://www.bdnews24.com/bangla/details.php?cid=2&id=124183&hb=1
[উত্তর দিন]
শাহরিয়ার উত্তর দিয়েছেন:
এপ্রিল 16th, 2010 at 6:23 পূর্বাহ্ন
সিলেটে বখাটের ছুরিকাঘাতে স্কুলছাত্রী গুরুতর আহত
http://dailykalerkantho.com/print_news.php?path=data_files/136&cat_id=1&menu_id=14&news_type_id=1&index=11
[উত্তর দিন]
কুকুর তো লালায়িত প্রানী, তাই সেই সকল ললনাদের অ নিয়ন্ত্রিত থাকা প্রয়োজন।
[উত্তর দিন]
vaia tomar lekha gulo etto valo laage .tumi koi thako??bd asle janio.jani na tomar koto suvakangkhi ase kintu jene rekho tomar r ekta soto vai pele tumi je hoito omar pashe sobsomoy thakbe 🙂
[উত্তর দিন]